প্রকাশিত: ০৫/০৭/২০১৬ ২:২৮ এএম

gomatoly picসেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও

অমাবস্যার জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে কক্সবাজার সদর উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের গোমাতলীর ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে নোনা জল লোকালয়ে ঢুকে পড়লে প্রায় ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়। বর্তমানে ঐ এলাকার হাজারো মানুষ নোনা পানিতে বন্দি হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার মৎস্য ঘের তলিয়ে গেছে এবং হাজার হাজার একর ফসলী জমি অনাবাদী হয়ে পড়েছে।

গতকাল সোমবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জোয়ার-ভাটার বৃত্তে বন্দী যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এই ১০ পাড়ায় সরকারী বা প্রাইভেট কোন স্বাস্থ্য কেন্দ্র না থাকায় ঔষুধের দোকান গুলোই সাধারণ মানুষের চিকিৎসার শেষ ভরসা এখন। এক সময়ের যোগাযোগ উন্নত গোমাতলী বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনের কারণে নিয়মিত জোয়ারে যাতায়তের প্রধান সড়কটিও বিলীন হয়ে যায়। যার ফলে বর্তমানে গোমাতলীর জনসাধরণের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম নৌকা। গত ২১ মে ঘূর্নিঝড় রোয়ানুর আঘাতে গোমাতলীর ২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ভাঙন বেড়িবাঁধ এলাকা দিয়ে অমাবস্যার জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। এতে ইউনিয়নে জোয়ারের পানিতে ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ জরীপ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট যথাযথ ক্ষতির রিপোর্ট প্রেরণ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে অমাবষ্যার জোয়ারেও পূনরায় প্লাবিত হয়েছে এসব এলাকা।

পোকখালী ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদ বলেন, গোমাতলী এলাকায় ঘূর্নিঝড় রোয়ানুর সময় বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর মেরামত না করায় গতকাল রবিরার দুপুরে ভাঙা বাঁধ দিয়ে নোনাজল গ্রামাঞ্চলে ঢুকে ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়। গতকাল সোমবার দুপুরে চলতি অমাবষ্যার জোয়ারে আবারো নোনাজলে ভরে গেছে। এতে শত শত একর ফসলি জমি ও শতাধিক ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়। পূনঃপ্লাবিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণকারী সরকারি ও এনজিওগুলোর তালিকাভূক্ত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের নিকট জরুরী ভিত্তিতে ত্রাণ পৌছে দেয়ার জন্য নিদের্শ দেন। প্লাবিত এলাকার গ্রামীণ অবকাঠামোর সড়ক ও সড়ক বিভাগের ১৫ কিলোমিটার সড়ক জোয়ারের পানির স্্েরাতে ভেঙে গেছে বলে এ প্রতিনিধিকে জানান।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দা শহিদুল্লাহ জানান, অমাবষ্যা ও পূর্ণিমার জোয়ারে নোনা জলে প্লাবিত জমিতে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে চাষাবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ভাঙন বেড়িবাঁধ মেরামত না করলে হাজার হাজার একর ফসলি অনাবাদি হয়ে পড়বে।

এ ব্যাপারে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি জানায়, ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাতে বেড়িবাধঁ বিলীন হওয়ায় গত ২দিন ধরে অমাবষ্যার জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পেয়ে সাগরের লোনা পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়। এভাবে প্রতিনিয়ত জোয়ার-ভাঁটা চলতে থাকলে এসব এলাকায় লোকজন বসবাস করা সম্ভব হবেনা। এর সাথে সাথে এসব এলাকার হাজার হাজার একর ফসলী জমি অনাবাদি হয়ে পড়বে। আগামী পূর্ণিমার জোয়ার আসার আগে বিলীন হওয়া বেড়িবাধঁ জরুরী ভিত্তিতে নির্মাণ করে যাতে বর্ষা মৌসুম ঠেকানো যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ ও সরকারের উর্দ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি দৃষ্ঠি আকর্ষন করেন।

পাঠকের মতামত